তাড়াতাড়ি ধনী হওয়ার জন্য আপনাকে যা যা করতে হবে !

কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায়: তাড়াতাড়ি ধনী হওয়াটা বর্তমান সময়ে প্রচুর ব্যক্তিদের একটি স্বপ্ন, তবে এই স্বপ্ন সত্যি করে কিভাবে ধনী হওয়া যায় এটা আবার প্রত্যেকে কিন্তু জানেনা। তবে, একেবারে ১০০% গ্যারান্টি না থাকলেও, এরকম প্রচুর ধাপ গুলো রয়েছে যেগুলোকে সঠিক ভাবে অনুসরণ করে আর্থিক সাফল্য সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে পারবেন। এই আর্টিকেলের মধ্যে আমি আপনাদের ধনী হওয়ার সবচেয়ে কার্যকর উপায় গুলির বিষয়ে বলবো। 

কিভাবে ধনী হওয়া যায়
ধনী হওয়ার সহজ উপায় (How to get rich in Bengali) ?

১. আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করুন:

যখন আপনার মাথায় একটি নির্ধারিত পরিষ্কার লক্ষ্য সেট করা থাকবে তখন আপনি ফোকাস এর সাথে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা নিয়মিত পাবেন। এতে আপনার মন এবং সিদ্ধান্ত নিয়মিত পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে এবং কিভাবে ধনী হওয়া যায় কেবল এই বিষয়ে আপনার রুচি ও ইন্টারেস্ট থাকবে। তাই, আপনার কত টাকা ইনকাম করার ইচ্ছে ? কিভাবে ইনকাম করবেন এবং কখন আপনি নিজেকে একজন ধনী ব্যক্তি হিসেবে দেখবেন ? এই বিষয় গুলো নিয়ে নিজের মনে একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।  

২. বাজেট তৈরি করুন:

এখন আপনি বলবেন, বাজেট তৈরি করে কি ধনী হওয়া যায় নাকি ? অবশই যাবে। অর্থ পরিচালনা এবং সম্পদ বৃদ্ধির চাবিকাঠি হলো, একটি বাজেট এবং বাজেট হিসেবে খরচ করা।

আপনি প্রত্যেক মাসে কত টাকা খরচ করছেন সেটা ট্র্যাক করুন এবং এভাবে একটি বাজেট তৈরি করুন যাতে আপনি খরচের থেকে অধিক টাকা সঞ্চয় (savings) করতে সক্ষম হন। মনে রাখবেন, বাজেট বানালেই কাজ হবেনা, আপনাকে তৈরি করা বাজেট অনুসরণ করেই টাকা খরচ করতে হবে।

৩. নিজের ওপর ইনভেস্ট করুন:

যিহেতু ধনী হওয়ার স্বপ্ন আপনি দেখছেন তাই এই স্বপ্ন আপনাকেই পূরণ করতে হবে। তাই, নিজের শিক্ষা, দক্ষতা এবং জ্ঞান এর ওপরে ইনভেস্ট করুন এবং নিজে একজন দক্ষ (skillful) ব্যক্তি হিসেবে তৈরি হন। এতে আপনি নিজের উপার্জনের সম্ভাবনা নিয়মিত বৃদ্ধি করে সময়ের সাথে সাথে সম্পদ (wealth) তৈরি করতে সক্ষম হবেন।

৪. শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করুন:

বর্তমান সময়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে বিশ্বজুড়ে প্রচুর লোকেরা ভালো মানের টাকা ইনকাম করছেন। যদিও শেয়ার বাজার প্রত্যেকের জন্য একটি সুবিধাজনক বিনিয়োগের উপায় না, তবে স্টক মার্কেট আপনাকে সময়ের সাথে সাথে সম্পদ (wealth) তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।

মনে রাখবেন, যেকোনো কোম্পানির শেয়ার কেনার আগে আপনাকে কোমনীটির বিষয়ে সম্পূর্ণ রিসার্চ করে নেওয়াটা জরুরি। যেই কোম্পানি গুলো নিয়মিত স্থিতিশীলতার এবং ভাল ট্র্যাক রেকর্ড এর সাথে বিকাশ করছে, আপনাকে কেবল সেই কোমপানির শেয়ার কেনা দরকার।

৫. অনলাইন সাইড ব্যবসা:

বর্তমান সময়ে অনলাইনে নানান ধরণের ব্যবসা গুলো আপনারা করতে পারবেন। এই ব্যবসা গুলো মূলত পার্ট-টাইম হিসেবে শুরু করে আপনারা আয়ের অতিরিক্ত প্রবাহ বা উপায় তৈরি করে নিজের রোজগার বৃদ্ধি করার সুযোগ পাবেন।

কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে মূলত কিছু অনলাইন ইনকামের উপায় গুলো জড়িত রয়েছে। যেমন, blogging, YouTube channel, Affiliate marketing, Freelancing ইত্যাদি। একটি অনলাইন সাইড ব্যবসার দ্বারা আপনারা দ্রুত ভাবে ওয়েলথ তৈরি করার সুযোগ পাবেন। 

৬. নিয়মিত টাকা জমানো:

এখন আপনি হয়তো বলতে পারেন যে নিয়মিত টাকা সঞ্চয় করে কেও কি কম সময়ে বা তাড়াতাড়ি ধনী হতে পারে নাকি ? অবশই, আপনি কি পরিমানে সঞ্চয় করছেন, সেটার ওপরে নির্ভর করছে, আপনি কখন ধনী হবেন। তবে কিছুই যদি বিনিয়োগ বা সঞ্চয় করতে পারছেননা, তাহলে ধনী হওয়ার প্রশ্নটাই তো থাকছেনা।

একজন ব্যক্তি প্রত্যেক মাসে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করছে এবং প্রত্যেক মাসে সে ৪০ হাজার খরচ করছেন ও ১০ হাজার সঞ্চয় বা সেভ করে রাখছেন। এখন, আপনি ধরুন প্রত্যেক মাসে ৩০ হাজার ইনকাম করছেন এবং ১০ হাজার টাকা খরচ করে প্রত্যেক মাসে ২০ হাজার টাকা সঞ্চয় বা সেভ করছেন।

এখন বছর শেষে, যেই ব্যক্তি ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করছিলেন সে আপনার থেকে অধিক ধনবান (wealthy) নাকি মাসে ৩০ হাজার ইনকাম করা আপনি তার থেকে অধিক ধনবান বা ধনী ?

বিষয়টা ভেবে দেখুন।

৭. ঋণ থেকে দূরে থাকুন:

যদি আপনি মাসে ১ লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন এবং আপনার আয়ের অধিকাংশ ঋণ বা লোন এর বাবদে কেটে যাচ্ছে তাহলে ১ লক্ষ টাকা আয় করার মানে কি রইলো ? ঋণ আপনার আর্থিক স্থিতিশীলতার উপর বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে এবং নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করার বিষয়টি, আপনাকে সঞ্চয় বা বিনিয়োগ থেকে দূরে রাখে। তাই তাড়াতাড়ি ধনী হতে চাইলে আপনাকে credit card, personal loans, digital loan, ইত্যাদির মতো অপ্রয়োজনীয় ঋণ বা লোন থেকে দূরে থাকতে হবে।

৮. সফল ব্যক্তিদের সাথে ঘিরে থাকুন:

আপনি যেরকম চিন্তাধারার লোকেদের সাথে সময় কাটাবেন, আপনার মানসিকতা ও চিন্তাধারা ধীরে ধীরে তাদের মতোই হয়ে যায়। তাই, সব সময় নিজেকে সফল এবং জ্ঞানী মানুষের সাথে ঘিরে রাখার চেষ্টা করুন, এতে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন এবং আপনার এই ধাপটি আপনার মধ্যে সম্পদ (wealth) তৈরির মানসিকতা গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে।

৯. পার্সোনাল ফাইন্যান্স এবং বিনিয়োগ সম্পর্কে:

কিভাবে ধনী হওয়া যায় ? ধনী হওয়ার উপায় কি ? যারা এই প্রশ্ন গুলো করছেন, তাদের জন্যে সবথেকে জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, নিজেকে সবচেয়ে আগেই পার্সোনাল ফাইন্যান্স এবং বিনিয়োগ সম্পর্কে শিক্ষিত করা। আপনাকে বিনিয়োগ এবং পার্সোনাল ফাইনান্স এর মূল বিষয়গুলি বুঝতে হবে। এর জন্যে আপনারা বই পড়ুন, অনলাইন কোর্স নিতে পারেন, ইউটিউবে ভিডিও দেখুন বা কোনো আর্থিক বিশেষজ্ঞর সাহায্য নিন। আপনাকে মূলত বিভিন্ন বিনিয়োগের বিকল্প, সঞ্চয় কৌশল এবং বাজেটের গুরুত্ব সম্পর্কে ভালো করে জানতে হবে। 

১০. ধৈর্য ধরুন:

ধনী এবং সমৃদ্ধ (wealthy) হওয়ার ক্ষেত্রে সময় অবশই লাগবে। মনে রাখবেন, আপনার পথে উত্থান-পতন অবশই থাকবে। অনেক সময় টাকা জমাতে বা খরচ কমাতে অনেক কষ্ট হবে, তবে ধৈর্য ধরে এগিয়ে যেতে থাকতে হবে। কেননা, একজন ধনী ব্যক্তি হওয়ার জন্য আপনাকে করতে হবে কঠোর পরিশ্রম, রাখতে হবে ধৈর্য এবং শৃঙ্খলা।

উপসংহার,

ধনী হওয়ার জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য এবং শৃঙ্খলার। নিজেকে পার্সোনাল ফাইনান্স এবং বিনিয়োগ সংগমত জ্ঞান দিতে হবে, একটি সেরা বাজেট তৈরি করে সেটাতে বজায় রাখতে হবে। এছাড়া, সবথেকে জরুরি বিষয়টি হলো, ঋণ বা লোন ইত্যাদির থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারলে ভালো। নিজের উদ্দেশ্যের প্রতি সুশৃঙ্খল এবং মনোযোগী থাকা এবং নিজেকে সফল ব্যক্তিদের সাথে ঘিরে রাখা,

এই বিষয় গুলো অনুসরণ করে, আপনি নিজের আর্থিক সাফল্যের সম্ভাবনা বাড়াতে পারেন।

অবশই পড়ুন: 

 

 

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top