ছেলেরা কিভাবে ভালোবাসা প্রকাশ করে ?

ছেলেরা কিভাবে ভালবাসা প্রকাশ করে: ভালোবাসতে কে না চায়, তবে সবাই ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারে না। আবার সবার ভালোবাসা প্রকাশের ধরন এক রকম হয় না।

সিনেমার রোমান্টিক সিনে, প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসার মুহুর্তে চাঁদ হঠাৎ করে বড়ো হয়ে যায়, মনে হয় ঠান্ডা হাওয়া বইছে।

আসলে এগুলো বাস্তবে কখনই হওয়া সম্ভব নয়। আর বাস্তবে সবার ভালোবাসা প্রকাশ এক রকম নয়।

তবে ছেলেদের এবং মেয়েদের ভালোবাসা বহিঃপ্রকাশের ধরনে তফাৎ টা খুব সহজেই লক্ষ্য করা যায়।

ছেলেরা কিভাবে ভালবাসা প্রকাশ করে থাকে

ছেলেরা কিভাবে ভালবাসা প্রকাশ করে
একজন ছেলে কি কি মাধ্যমে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করে থাকে ?

বেশিরভাগ সময় ভালোবাসা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে ছেলেরা যে কয়েকটি বিষয়ের ওপর লক্ষ্য রাখে তা নীচে আলোচনা করা হল, আশা করছি লেখাটি পাঠকের ভালো লাগবে।

১) মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা

ছেলেরা ভালোবাসা প্রকাশের প্রথম ধাপেই যে কাজটি করে থাকে তা হল তার পছন্দের মানুষটির মনোযোগ আকর্ষণ। 

যখন কোনো ছেলে কোনো মেয়েকে পছন্দ করে তখন সে তার ব্যক্তিগত বিষয়গুলোতে ধীরে ধীরে বেশি আগ্রহ দেখাতে আরম্ভ করে।

মেয়েটির সাথে কথা বলার সময় ছেলেটি কথার  প্রত্যেকটি শব্দের দিকে বিশেষ নজর দেবে।

কথা বলার সময় সে তার কণ্ঠস্বরেও কিছুটা পরিবর্তন করবে, স্বরটি অনেক বেশি আন্তরিক হবে।

আর এটি শুধু তার পছন্দের মেয়েটির জন্যই সে করে থাকে।

যখন সে মেয়েটির সামনে আসবে তখন সে নিজেকে পরিপাটি ভাবে পরিবেশন করবে।

কোনো ছেলের শারীরিক ভাষার যেসব লক্ষণ দেখে বোঝা যায় যে সে তার সামনের মেয়েটিকে ভালোবাসে তা হল, মেয়েটির সামনে ছেলেটির পরিপাটি ভাব।

ছেলেটি বারবার  নিজের জিন্স-টি শার্ট ঠিক করবে, চুল এলোমেলো হয়ে গেল কি না তা দেখবে।

এসব দেখে খুব সহজেই বোঝা যায় ছেলেটি  তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে ইচ্ছুক।

২) মুখোমুখি হওয়ার প্রবণতা

 যখন কোনো ছেলে তার পছন্দের মেয়েটির  সাথে বসে কথা বলে তখন সে পুরোপুরি মেয়েটির মুখোমুখি বসার চেষ্টা করে।

অন্যভাবে বলা যায়, ছেলেটি মেয়েটিকে এটি বোঝানোর চেষ্টা করে যে তার অন্য কারো দিকে তাকানোর সময়ই নেই।

শুধু তাই নয়, ছেলেটি যেকোনো ভাবে মেয়েটির মুখোমুখী হবার চেষ্টা করবে, চোখের চাহনিতে আনুগত্য প্রকাশ করবে, মেয়েটির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করবে।

আসলে ছেলেটি যত বেশিক্ষন মেয়েটির সামনে উপস্থিত থাকবে, মেয়েটির ক্ষেত্রে তত ছেলেটির মনের ভাব বুঝতে সুবিধা হবে।

তাই যদি কোনো ছেলে কারনে বা অকারনে কোনো মেয়ের কাছে বারবার ছুটে আসে, তার সঙ্গে সময় কাটাতে চায় তাহলে বুঝতে হবে ছেলেটি নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করতে ইচ্ছুক।

৩) অহেতুক কথা বলার চেষ্টা

কথা বলার ধরন সব মানুষের এক রকম হয় না। আবার একজন মানুষ, সবার সাথে একরকম ভাবে কথা বলে না। কেউ কেউ থাকে, যাদের সঙ্গে সে নিজে স্বেচ্ছায় কথা বলতে চায়।

কথা বলার ধরন, শব্দচয়ন, কন্ঠস্বর, ইত্যাদি থেকে বোঝা যায়, মানুষটির মনের ইচ্ছে গুলো।

ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে যেমন সারা দিনের সব কথা, অতীতের কথা, ভবিষ্যতের কথা সব ভাগ করে নেওয়া যায় তেমনি, যে মানুষটাকে মন ভালোবাসতে চায়, সেই মানুষটার সাথেও বারবার কথা বলতে চাওয়াই হলো ভালোবাসার লক্ষণ।

তাই প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় যা কথা সেই মানুষটার সাথেই ভাগ করে নেওয়া চাই।

ছেলেরা এদিক থেকে বেশ বিচক্ষণ। তারা সঠিক সময়ে নিজের ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে মনের কথা বলে। যে মুহুর্ত গুলোতে কেবল তারা দুজন থাকবে।

যদি কোনো ছেলে কোনো মেয়ের সঙ্গে সোস্যাল মিডিয়ার ইনবক্সে ব্যক্তিগত জীবনের আলোচনা, অতীতের ঘটনা, নিজের পছন্দ, ভালোবাসার অভিজ্ঞতা এই বিষয় গুলি নিয়ে কথা তোলে তাহলে ছেলেটি নিশ্চিত ভাবে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করছে।

৪) সাহায্য করারা প্রবণতা

 বেশিরভাগ ছেলেরাই মেয়েদের সাথে ভদ্র আচরণ করে, কিন্তু যখন কোনো ছেলে কোনো একটি মেয়ের প্রতি বিশেষভাবে আকর্ষণ বোধ করে তখন সে বিভিন্নভাবে মেয়েটিকে সাহায্য করার চেষ্টা করে। 

হতেই পারে ছেলেটি ভিড় ট্রেনে মেয়েটিকে মানুষের ভীড় থেকে আগলে রাখল, অথবা স্কুল বা কলেজ লাইফ হলে নিজে থেকেই বিভিন্ন নোটস, দেওয়া, পড়া বুঝিয়ে দেওয়া, প্রাকটিক্যালে হেল্প করা, মানসিক আঘাত পেলে সান্তনা দেওয়া, মেয়েটির জন্য বিশেষ উপহার আনা।

এই আচরন গুলি খুব সাধারণ ভাবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়। 

৫) সব সময় চোখে চোখে রাখা

এই অভ্যাসটি ছেলে এবং মেয়ে দুজনের জন্যই প্রযোজ্য। একটি ছেলে যখন কোনো মেয়েকে পছন্দ করে তখন সে মেয়েটিকে চোখে হারায়, মানে এক পলকও মেয়েটির থেকে চোখ সরাতে পারে না।

এমন যদি কখনো হয় যে সেখানে অন্য মানুষ থাকা সত্ত্বেও ছেলেটি মেয়েটির দিকেই বারবার তাকানোর চেষ্টা করছে বা স্থির দৃষ্টিতে অনেকক্ষন মেয়েটির দিকে চেয়ে আছে তাহলে মেয়েটিকে বুঝতে হবে ছেলেটি মেয়েটির প্রতি দুর্বল।

আর সবসময় তাকিয়ে থাকার অর্থ হতে পারে – সে অন্যান্য মেয়ে বা বন্ধুদের সাথে কথা বলার চেয়ে ঐ মেয়েটির ওপরই বেশি আগ্রহী।

৬) বিশেষ ক্ষেত্রে ঈর্ষান্বিত হওয়া

ভালোবাসায় হিংসা বা ঈর্ষা থাকা ভালো। যদি এমন কখনো হয়, কোনো মেয়ে যখন কোনো ছেলের সাথে কথা বলে তখন একটি ছেলে কিছুটা ঈর্ষান্বিত হয় তবে এটি নিঃসন্দেহে বুঝতে হবে যে ঈর্ষান্বিত ছেলেটি  ওই মেয়েটির ওপর প্রেমে পড়েছে।

৭) সব সময় কাছে থাকার চেষ্টা

যখন ছেলেরা কোনো মেয়ের প্রেমে পড়ে এবং কোনো ভাবেই মুখে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে না, তখন  যে কোনোভাবেই সে মেয়েটির কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করে।

সে মেয়েটির সঙ্গে বেশির ভাগ সময় কাটাতে চায়, যদি মেয়েটি তার অফিসের কলিগ হয় তাহলে ক্যান্টিনে বা ফিরতি বাসে বা বিভিন্ন কাজের বাহানায় সে মেয়েটির কাছে যেতে চায়।

স্কুল বা কলেজের ঘটনা হলে, বাস স্ট্যান্ড বা স্টেশনে অপেক্ষা করা, টিউশানি পড়তে গিয়ে অপেক্ষা করা  ফেরার পথে অপেক্ষা করা, ইত্যাদি।

যদি কেউ এমন কোনো ছেলেকে দেখে থাকেন যে সব সময়ই নিজের পছন্দের মেয়েটির ধারে-কাছে ঘোরাঘুরি করে, মেয়েটির সঙ্গে ঘোরাঘুরি করে তার মানে এটা ধরে নেওয়া যেতেই পারে যে, ছেলেটি ওই মেয়েটির কাছে ভালোবাসা প্রকাশ করার সুযোগ খুঁজছে।

৮) পছন্দের মানুষের সাথে থাকলে আনন্দ অনুভব করা

এমন যদি কেউ দেখে থাকেন যে কোনো ছেলে একজন বিশেষ মেয়ের সঙ্গে থাকলে তার মনের অনেকটা পরিবর্তন ঘটছে তাহলে বুঝতে হবে মনের এই পরিবর্তন আসলে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।

সাধারণত কোনো ছেলে যদি তার ভালোবাসার মানুষের কাছাকাছি থাকে তাহলে সে আগের অবস্থা থেকে অনেক বেশি হাসিখুশি হয়ে যায়, তবে এই হাসিখুশি অবস্থাতে সে কিছুটা লজ্জাও পায়।

তার মনের এই অবস্থা কিন্তু বুঝিয়ে দেয় সে ওই মেয়েটির প্রেমে পড়েছে। 

আমাদের শেষ কথা,,

যদি কোনো পাঠিকা লেখাটি পড়তে পড়তে ভাবেন যে উপরের লক্ষন গুলি তিনি কোনো ছেলের মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন তাহলে তার আর বুঝতে অসুবিধা থাকবে না, ছেলেটি আসলে এই লক্ষন গুলির সাহায্যে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করছে।

আর তাহলে বুঝে নিতে হবে ওই ছেলেটি আপনাকে ভালোবাসতে আরম্ভ করেছে, মুখে না বললেও তার আচরণ তাই প্রকাশ করছে ।

আবার কোনো পাঠক যদি লেখাটি পড়ে অনুভব করেন যে কোনো মেয়ের প্রতি তাঁর এই লক্ষন গুলি প্রকাশ পাচ্ছে।

তাহলে বুঝতে হবে মনের অজান্তেই আপনি আপনার মনের মানুষকে ভালোবাসতে আরম্ভ করেছেন।

আশা করছি, ছেলেদের ভালোবাসা প্রকাশ করার মাধ্যম গুলো নিয়ে বা এই বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারণা আপনার হয়ে গেছে। 

আর্টিকেলটি সত্যি ভালো লেগে থাকলে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলোতে অবশই শেয়ার করবেন।

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top