ছেলেদের রাগ ভাঙ্গানোর সেরা ১০ টি উপায় জেনেরাখুন

আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানবো ছেলেদের রাগ ভাঙ্গানোর উপায় গুলোর বিষয়ে বাংলাতে।

রেগে যাওয়া মানুষের স্বাভাবিক চরিত্রেরই একটা ভাগ। 

রাগের ব্যাপারে মেয়েরা এগিয়ে থাকলেও, মাঝে-মধ্যে ছেলেদের রাগও কিন্তু উত্তপ্ত পারদের মাত্রাও ছাড়িয়ে যেতে পারে। 

ছেলেরা খুব সহজে রাগ না করলেও, তাদেরও কিন্তু রাগ-অভিমান বোধ হয়। 

আর, তখন সেই রাগ ভাঙানোও কিন্তু বেশ জটিল কাজ হয়ে দাঁড়ায়।

আজকে আমাদের আর্টিকেলটি সেইসব মানুষদের জন্যে, যাদের পুরুষ বন্ধুগুলো চট করে রেগে যায়, আর তাদের গোঁসা ভাঙাতে গিয়ে আপনাদের একেবারে নাজেহাল হতে হয়। 

তবে, আর চিন্তা নয়! এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্যে রইলো ছেলেদের রাগ ভাঙ্গানোর সেরা ১০ টি উপায়

ছেলেদের রাগ ভাঙ্গানোর উপায় – (সেরা ১০টি)

ছেলেদের রাগ ভাঙ্গানোর উপায়

চলুন তাহলে, এখন আমরা নিচে সরাসরি জেনেনেই ছেলেদের রাগ কমানোর বেস্ট টিপস গুলোর বিষয়ে।

১. মানুষটা কি বিষয়ে রেগে আছেন:

কেউ তো আর এমনি-এমনি রাগ করে বসে থাকে না। 

তাই, আপনার প্রিয় পুরুষ মানুষটা কি বিষয়ে রেগে আছেন, সেটা আগে খুঁজে বের করুন। 

যদি খুঁজে না বের করতে পারেন, তবে তাকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে জিজ্ঞেস না করে, তার শান্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। 

রাগের মাথায় মানুষটার রাগের কারণ জিজ্ঞেস করা মোটেই ভালো আইডিয়া নয়। 

কারণ, আপনার প্রশ্নটা সাময়িকভাবে তাকে আরও বিরক্ত করে তুলতে পারে। 

তাই, আপনি যখন মনে করবেন, যে প্রশ্ন করার সঠিক সময় উপস্থিত হয়েছে, তখনই তাকে জিজ্ঞাসা করুন তার রাগের কারণ সম্পর্কে। 

যদি আপনি তার রাগের বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত থাকেন, আর রাগের কারণও যদি আপনিই হন, তাহলে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে ভুলবেন না!

২. ‘Sorry’ বলতে শিখুন:

ভুল করলে তো ক্ষমা চাইতেই হয়! 

তাই, নিজের ইগোকে বিদায় জানিয়ে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে সেই ছেলেটার রাগ কমানোর চেষ্টা করুন। 

সাধারণত, বেশিরভাগ ছেলেরাই দ্রুত রেগে যায়, আবার তাদের রাগও দ্রুত পড়ে যায়। 

তাই, আপনার প্রিয় মানুষটার মুখের দিকে চেয়ে, তার রাগ ঠান্ডা করতে ‘সরি’ বলতে ভুলবেন না! 

মন থেকে ক্ষমা চাইলে, ভগবান যদি পাপের বোঝা কম করতে পারেন, তাহলে একজন রেগে যাওয়া মানুষও দিব্যি ক্ষমা করে দিতে পারে আপনার ভুলগুলোকে!   

৩. তাকে ঠান্ডা হতে সময় দিন:

রাগের সবথেকে বড় ওষুধ হল রেগে যাওয়া মানুষটাকে কিছুটা সময় একা ছেড়ে দেওয়া। 

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষের রাগ সময়ের সাথে সাথে এমনিতেই কমে যায়। 

তাই, আপনার পুরুষ বন্ধুটা খুব বেশি রেগে গেলে, তাকে নিজে থেকেই রাগ কমানোর সময় দিন। 

কিংবা, মানুষটা যদি আপনার থেকে কিছুটা সময় চেয়ে একা থাকতে চায়, তাহলে তার সেই ডিসিশনকে সম্মান করুন আর তার প্রয়োজনীয় সময় ও স্পেস তাকে দিন। 

এতে মানুষটার রাগও কমে যাবে, আর আপনাদের মধ্যে কোনো অযাচিত অশান্তিও হবে না।

৪. নিজের মাথা ঠান্ডা রাখুন:

একেই অপর জনের মাথা গরম হয়ে আছে, আর তার সাথে-সাথে যদি আপনিও মাথা গরম করে বসে থাকেন, তাতে কিন্তু অশান্তিই বাড়বে, আর উল্টে কোনো সমাধানই বেরোবে না। 

যদিও, আপনার সঙ্গীটি যখন রেগে থাকবে, তখন আপনার মেজাজও যে খারাপ থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। 

কিন্তু, আপনার পাল্টা রাগ শুধুমাত্র পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে দিতে পারে। 

তাই, এই সময়ে শান্ত এবং ধৈর্যশীল থাকার চেষ্টা করুন। 

যখন দেখবেন, আপনার মাথায় খুব বেশি গরম হয়ে যাচ্ছে, তখন জোরে শ্বাস নিন আর তারপরে ভেবেচিন্তে কথা বলুন।

আর, আপনি তার জন্য কি করলে তার মাথা ঠান্ডা হবে, তা তাকে জিজ্ঞেস করে দেখুন। 

রাগের সময়ে আপনি তার সাথে ঠান্ডা মাথায় মিষ্টিভাবে কণ্ঠস্বর নিচু করে কথা বলুন। 

বা তাকে চা-কফি বা ঠান্ডা পানীয় অফারও করতে পারেন। 

হয়তো, মিষ্টিভাবে কথা বলতে থাকলে সে আপসেই রাগ ভুলে হাসি মুখে আপনার প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারে।

৫. তাকে মানসিকভাবে নিরাপদ বোধ করান:

আপনার পুরুষ বন্ধুটা রেগে গেলে তাকে স্বান্ত্বনামূলক কথা বলুন ও তার সমালোচনা করা এড়িয়ে যান। 

এছাড়াও, তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন আর তাকে মানসিকভাবে সমর্থন করুন। 

মনে রাখবেন যে, ছেলে-মেয়ে-নির্বিশেষে সব মানুষেরই একটা মানসিক নিরাপত্তার প্রয়োজন আছে।

৬. মানুষটার প্রশংসা করুন বা হাসানোর চেষ্টা করুন:

কখনও কখনও কোনো ছেলে রেগে গেলে তার প্রশংসা করেও দেখতে পারেন। 

আবার, কিছু কিছু ছেলে রেগে গেলে তখন তাদেরকে বেশ সুন্দর কিংবা মিষ্টি দেখায়। 

তাই, সে রেগে গেলে তার প্রশংসা করতে থাকলে বেশির ভাগ সময়ই কিন্তু তার রাগ তাড়াতাড়ি কমে যায়। 

তাই, তাকে যেকোনোভাবেই হাসানোর চেষ্টা করুন। 

তাকে কোনো মজাদার জোকস ও শুনিয়ে দেখতে পারেন, যে তার রাগ কমছে কিনা!

৭. তাকে কোনো কিছুর জন্যই অভিযুক্ত করবেন না:

তার রাগের সুযোগ নিয়ে কখনোই তার অতীতে করা কোনো ভুলের প্রসঙ্গ ভুল করেও টেনে আনবেন না। 

এতে তার রাগ কমানোর বদলে সেটাকে বাড়িয়েই দিতে পারে। 

তাই, এই পরিস্থিতিতে চেষ্টা করবেন যে অতীতে তার করা ভুলগুলোর কথা তাকে মনে না করিয়ে দিয়ে, বরং বর্তমান সময়ে তার রাগকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে। 

৮. সহানুভূতিশীল হন:

তাকে বোঝান যে আপনি তার অনুভূতিগুলো বুঝতে চাইছেন আর তার মন ভালো করতে চাইছেন। 

আপনি যেসব ভুল করেছেন বা বলেছেন তার জন্য আপনি সত্যিই দুঃখিত হয়েছেন, সেটা তাকে বোঝান। 

আর, তার এই রাগের কারণ নিয়ে আপনি যে মজা করবেন না বা কিংবা তার অনুভূতিগুলো উপেক্ষা করবেন না, সেটাও তাকে বুঝিয়ে বলুন।

পরিবর্তে, তাকে বোঝান যে, আপনি তার পাশেই আছেন। আর, আপনি কোনও ভুল করে থাকলে তার জন্যে আপনি মন থেকেই দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

৯. তার জন্যে স্পেশাল কিছু করুন:

মানুষ রেগে থাকলে আপনি যদি তার জন্যে তারই পছন্দের কোনো কাজ করেন, তবে সেই কাজটা সেই মানুষটাকে খুশি করে দিতে পারে। 

উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, আপনি আপনার প্রিয় মানুষটার জন্যে তার পছন্দের কোনো খাবার রান্না বা অর্ডার করতে পারেন। 

কিংবা, তাকে কোনো সারপ্রাইজ গিফটও দিতে পারেন। 

তা নাহলে, তার জন্যে তার প্রিয় গেম নাইটের ব্যবস্থাও করে দিতে পারেন। 

এতে, তার মেজাজ একটু হলেও ভালো হতে পারে। 

আপনি তাকে কোনো স্পেশাল মেসেজেরও আয়োজন করে দিতে পারেন।

১০. গঠনমূলক কথোপকথন করুন:

ছেলেরা অনেক সময় রাগ করে কারণ তারা মনে করে যে, তাদের কথা শোনা হচ্ছে না বা তার কথার কোনো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বা তার কোনো ভালো কাজের জন্য প্রশংসা করা হচ্ছে না। 

এই কারণগুলোই অনেক সময় তাদের মনে হতাশা ও উপেক্ষা বোধ তৈরী করতে পারে। 

তাই, আপনার সঙ্গীর রাগ এড়াতে, যতক্ষণ না সে নিশ্চিত হচ্ছে, যে আপনি তার কথা শুনছেন ও বুঝতে পারছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত  সক্রিয়ভাবে তার কথা শুনে যান। 

তার সাথে গভীরভাবে কথপোকথন করুন আর তার চাহিদা, অনুভূতি ও অভিজ্ঞতাগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। 

পরিশেষে:

যেকোনো সম্পর্কের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি আর তর্ক হওয়াটা খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার। 

ছোটখাটো বিষয় হোক কিংবা গুরুতর কোনো বিষয়, যখন কোনো মানুষ একে অপরের সাথে তাদের জীবন ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সেখানে আনন্দ-ভালোবাসার পাশাপাশি রাগ-অভিমান থাকাটাও খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। 

আর, এই রাগের পিছনে কারণ যাই হোক না কেন, এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ভুলের ক্ষমা চাওয়া আর ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে একে-অপরের মনকে সঠিকভাবে বুঝে সারাজীবন খুশিতে সময় কাটানো। 

তাই, সেক্ষেত্রে আপনারাও উচিত আপনার প্রিয় পুরুষ মানুষটার রাগ ভাঙিয়ে সম্পর্কটাকে হাসিখুশি রাখা। 

আমাদের আজকের ছেলেদের রাগ কমানোর উপায় নিয়ে লেখাটি এখানেই শেষ হল। 

লেখাটি ভালোলাগলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top