জীবনে উন্নতি করার সেরা ১০টি উপায় গুলো কি কি ?

জীবনে উন্নতি করার উপায়: প্রতিটি ব্যক্তির নিজের জীবন কাটানোর আলাদা আলাদা ধরণ থাকে।

মানুষ যে জায়গা এবং যে পরিবেশের সাথে যুক্ত থাকে তাঁর থাকা, খাওয়া, তাঁর ভাষা ব্যবহার সেই হিসাবেই হয়ে থাকে।

নিজের চাহিদা পুরা করার জন্য প্রত্যেকটি ব্যক্তি সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কষ্ট করে থাকে।

এমন অনেক ব্যাক্তি রয়েছে যাদের জীবনে প্রতিদিন শুধু ৮ থেকে ১০ ঘন্টা কাজ, খাওয়া এবং ঘুমানো এবং তাঁরা এভাবেই সারাজীবন কেটে যায়।

এমন ব্যক্তিরা নিজের জীবনের জন্য কিছু নতুন, কিছু বিশেষ করতে পারেনা। 

ভগবান আমাদের চিন্তা করার, বোঝার এবং অনুভব করার শক্তি  দিয়েছে।

যার ফলে মানুষ চিন্তাকরে, বোঝে এবং অনুভব করে নিজের জীবন কাটানোর ধরণকে আরো উন্নত বানাতে পারে, এবং নিজের জীবনে নতুন কিছু করে নিজের জীবনেকে বদলাতে পারে। 

তাহলে চলুন বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জেনে নেই কি কি উপায় ব্যবহার করে আপনি নিজের জীবনে উন্নতি করতে পারবেন। 

নিচে প্রতিটি উপায় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। 

জীবনে উন্নতি করার উপায় গুলো

জীবনে উন্নতি করার উপায়
উন্নত জীবনের জন্য কি কি করতে হবে ?

চলুন বন্ধুরা, এবার আমরা নিচে সরাসরি জেনেনেই, কিভাবে আমরা নিজেদের জীবনে উন্নতি করতে পারবো।

১. নতুন নতুন জিনিস শেখার চেষ্টা করুন

আমাদের মস্তিস্ক অসীমিত তথ্য গ্রহণ করার ক্ষমতা রাখে তাই আমাদের সবসময় কিছু না কিছু নতুন জিনিস শিখতে থাকতে হয়। 

কিছু নতুন শেখার অভ্যাস আপনার জীবনে উৎসাহ ভরে দেয়।

তাই নতুন নতুন কাজ করতে থাকুন, নতুন নতুন জিনিস শিখতে থাকুন যেমন নতুন ভাষা শিখুন বা প্রতিদিন vocabulary এর একটি নতুন শব্দ শিখুন।

 নিজের কর্মজীবনের সম্পর্কিত কোনো নতুন কোর্স করুন নিজের স্কিল্স (skills) বাড়ান।

এছাড়াও  বাদ্যযন্ত্র বাজানো , গান, কবিতা লিখা, নৃত্য, রান্না শেখা, হস্তশিল্পের কাজ ইত্যাদি অনেক কিছু আছে যেগুলো আপনি শিখতে পারেন। 

কিছু নতুন শেখার অভ্যাসের ফলে নতুন নতুন বিষয়ে শিখার বাইরেও আপনার তথ্য জ্ঞান বাড়ে, সামাজিক মূল্যবোধ বাড়ে এবং তাঁর সাথে সাথে  আপনার  জীবনে উৎসাহ এবং শক্তি বাড়তে থাকে।

যা আপনার মানসিক চাপের মাত্রা কম করে আপনাকে মানসিকভাবে শক্তিশালী বানিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। 

২. প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করার অভ্যাস করুন

প্রতিদিন এমন কোনো একটি কাজ করার  অভ্যাস করুন যেটা আপনাকে খুশি দিবে। 

এক্ষেত্রে আমি পরামর্শ দিবো, যেই কাজ করার ফলে অন্যের ভালো হবে অন্যের সাহায্য হবে এমন কোনো কাজ প্রতিদিন করতে থাকুন।

যেমন কোনো গরিব মানুষকে সাহায্য করা, কোনো ক্ষুদার্থকে খাওয়া দেওয়া, পাঁখিদের দানা দেওয়া, কোনো অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করা, রাস্তায় বয়স্ক মানুষদের রাস্তা পার করে দেওয়া, রাস্তার কুকুরদের খাওয়া দেওয়া ইত্যাদি।

এমন অনেক ভালো কাজ আছে যেগুলো আপনি করতে পারেন। 

যখন এই কাজগুলো আপনি মন থেকে করবেন তখন আপনি ভেতর থেকে অনেক আনন্দিত অনুভব করবেন এবং মনে সকারাত্মক বিচারধারা (positive thoughts) জন্ম নিবে।

এছাড়া, মনের মধ্যে সত্যিকারের শান্তি পাবেন এবং পরিবর্তে আপনি তাঁদের থেকে অনেক ভালোবাসা এবং আশীর্বাদ পাবেন। 

৩. নিজের জীবনে লক্ষ্য তৈরী করুন :-

জীবনে উন্নতি করতে চাইলে যে জিনিসটি আপনি জীবনে পেতে চান তাঁর জন্য একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারিত করুন কারণ লক্ষই আমাদের সেই  জিনিসটি পেতে সাহায্য করে থাকে। 

লক্ষই আমাদের কাজ করার উদেশ্য বলে দেয় এবং সেই কাজটি করার জন্য সঠিক দিশা নির্ধারণ করে দেয়। 

তাই আপনার জীবনে একটি মুখ্য লক্ষ্য বানান, যেমন আপনি জীবনে কি করতে চান ? আপনি জীবনে কি হতে চান ? আপনি জীবনে কি পেতে চান ?

তারপর সেই লক্ষ্য প্রাপ্তকরার জন্য, নিজের গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য আপনার জীবনের প্রত্যেকটি স্তরে ছোটো ছোটো লক্ষ বানান।

এরপর এক এক করে ধীরে ধীরে পরিশ্রমের দ্বারা  প্রথমে ছোটো ছোটো লক্ষ গুলো জয় করুন। 

এবং তারপর দেখতে দেখতে আপনি আপনার বড়ো লক্ষগুলোও প্রাপ্ত করে ফেলবেন। 

৪. প্রতিদিন পড়ার অভ্যাস করুন :-

প্রতিদিন অল্প সময় হলেও পড়ার অভ্যাস করে ফেলুন কারণ পড়লে আমাদের  শিক্ষা এবং জ্ঞান দুটোই বাড়ে। 

প্রতিদিন পড়ার ফলে  আপনি আপনার জীবনের সাথে জড়িত প্রত্যেকটি জিনিসকে নতুনভাবে দেখতে শুরু করবেন এবং নিজের জীবনকে নতুনভাবে কাটাতে শুরু করবেন। 

তাই প্রতিদিন কিছু না কিছু নতুন পড়ার অভ্যাস করে ফেলুন যেমন আপনার পছন্দের কোনো সাহিত্য, খবরের কাগজ, কবিতা, অনুপ্রেরণামূলক কাহিনি  ইত্যাদি সফল ব্যক্তিদের জীবনী পড়ুন।

প্রতিদিন পড়ার অনেক লাভ আছে যেমন খবরের কাগজ পড়ার ফলে প্রতিদিন আপনি দেশ দুনিয়ার খবর পাবেন কখন কি ঘটছে, বই এবং ম্যাগাজিন পড়লে নতুন নতুন কথা জানা যায়, সফল ব্যক্তিদের জীবনী পড়লে তাঁদের সঙ্ঘর্ষের কথা পড়লে নিজের জীবনে আগে বাড়ার প্রেরণা পাওয়া যায়। 

তাই জীবনে উন্নতি করতে হলে পড়া খুব জরুরি একটি অংশ। 

৫. নেতিবাচক বিচারগুলো জীবন থেকে বের করে ফেলুন :-

নেতিবাচক বিচারগুলো নিজের জীবন থেকে একেবারে বের করে ফেলুন কারণ আপনার জীবন আপনার বিচারের দ্বারাই চলে।

যেমন আপনার মানসিকতা এবং বিচার হবে তেমনি আপনার জীবন এবং আপনার ব্যক্তিত্ব হবে। 

তাই যতই খারাপ পরিস্থিতি হোক না কেনো, যতই বিপদ আসক না কেনো কখনো নেগেটিভ ভাবা উচিত নয়। 

নকরাত্মক বিচারগুলোকে এবং নেগেটিভ কথা বলা ব্যাক্তিদের নিজের জীবন থেকে সম্পূর্ণভাবে দূরে সরিয়ে ফেলুন। 

এবং সবসময় পসিটিভ থাকুন, পসিটিভ কথা বলা ব্যক্তিদের নিজের জীবনে জায়গা দিন। 

প্রতিটি বিপদ, প্রতিটি ঝামেলার সাহসের সাথে মোকাবেলা করুন এবং পসিটিভ হয়ে নিজের গন্তব্য পাওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে থাকুন। 

৬. অন্যের সাথে নিজের তুলনা না করা :-

প্রত্যেক ব্যক্তির আলাদা আলাদা জীবন থাকে এবং প্রত্যেকেরই  আলাদা আলাদা যোগ্যতা থাকে।

 সকলে  নিজের পরিশ্রম এবং যোগ্যতার দ্বারা নিজের সুখ সুবিধা অর্জিত করে থাকে। 

তাই যেকোনো ক্ষেত্রে যেকোনো জিনিস নিয়ে অন্যের সাথে নিজের তুলনা করা, কারো সাথে ঈর্ষা করা কখনই উচিৎ নয়। 

কারণ যখন আপনি তাঁদের সাথে নিজের তুলনা করতে শুরু করবেন যারা আপনার থেকে উঁচু পর্যায়ে, আপনার থেকে ভালো পরিস্থিতিতে রয়েছে তখন আপনি চিন্তিত থাকতে শুরু করবেন, দুঃখী থাকবেন এবং মনে হিংসা ভাব চলে আসতে পারে। 

এবং যখন আপনি নিজেকে এমন ব্যক্তির সাথে তুলনা করবেন জেনাকী কোনো মামলায় আপনার থেকে কম তখন আপনি অহংকারে ভরে উঠবেন এবং দুটো অবস্থাই আপনার জন্য ক্ষতিকর। 

তাই আপনার কাছে যা কিছু আছে, যতটুকু আছে তা নিয়ে অহংকার কখনোই করবেননা এবং আপনার কাছে যা নেই তা নিয়ে চিন্তিত বা দুঃখী না থাকাটা উন্নত এবং ভালো জীবনের জন্য অনেক জরুরি। 

৭. হাঁসিকে নিজের অভ্যাস বানিয়ে ফেলুন :-

মন খুলে হাঁসলে অনেক বড়ো বড়ো অসুখ থেকে দূরে থাকা যায়, কারণ হাঁসি আমাদের শরীরে ওষুধের মতো কাজ করে থাকে।

তাই দিনের মধ্যে কম পক্ষেও ১০ থেকে ১২ বার মন খুলে হাঁসুন এবং নিজের ছোটো থেকে ছোটো খুশি গুলোকে উদযাপন করুন। 

আপনি যখনি কারো সাথে দেখা করেন, কথা বলেন তখন হেঁসে কথা বলুন। 

বন্ধুদের সাথে দেখা হলে হাঁসি মজাকের মাহল বানানোর চেষ্টা করুন এবং আপনিও হাঁসুন অন্যদেরও হাসান। 

এটি একটি বিনা মূল্যের উপহার যেটা আপনি সবাইকে দিয়ে নিজেও খুশি হতে পারবেন।

তাই একটি দারুন, সুখী এবং উন্নত জীবনের জন্য হাঁসিকে নিজের জীবনের অভ্যাস বানিয়ে ফেলুন। 

সবসময় হাঁসি খুশিতে থাকলে আপনি প্রতিমুহূর্তে শক্তিশালি অনুভব করবেন, রিফ্রেশিং এবং চিন্তামুক্ত অনুভব করবেন। 

ফলে প্রতিটি কাজ আপনি মন দিয়ে করতে সক্ষম হবেন। 

৮. আশাবাদী হতে শিখুন :-

একজন নিরাশাবাদী ব্যক্তি সব সুযোগেই সমস্যা, অসুবিধা দেখতে পায় কিন্তু অপরদিকে একজন আশাবাদী ব্যাক্তি বিভিন্ন সমস্যা, অসুবিধার মধ্যেও একটি সুযোগ খুঁজে থাকে, আর এটাই কারণ যার জন্যে আশাবাদী ব্যক্তির জীবন সম্ভাবনায় ভরা থাকে। 

এধরনের ব্যক্তি প্রতিটি সমস্যা অসুবিধার থেকে বের হওয়ার রাস্তা নিজেই খুঁজে নিতে সক্ষম।

আশাবাদী ব্যক্তিরা প্রতিটি জিনিসকে, প্রতিটি কথাকে সকরাত্মক দৃষ্টিকোণ দিয়ে দেখে থাকে। 

তাই, উন্নত জীবনের জন্য জীবনে আশাবাদী হতে চেষ্টা করুন।

যতই সমস্যা হোক না কেনো যতই খারাপ পরিস্থিতি হোক না কেনো কখনো আশা ছাড়বেননা। 

জীবনের প্রতিটি সমস্যা, অসুবিধাকে পসিটিভিটির সাথে বিচার করলে আপনি ঠিক রাস্তা পেয়ে যাবেন। 

তাই আশাবাদী হয়ে জীবনে উন্নতির পথে এগিয়ে চলুন। 

 

আমাদের শেষ কথা,,

তাহলে বন্ধুরা, কিভাবে জীবনে উন্নতি করা যাবে বা জীবনে উন্নতি করার উপায় গুলো কি কি ? এই নিয়ে লিখা আমাদের আজকের আর্টিকেল এখানেই শেষ হলো। আশা করছি আমাদের আজকের আর্টিকেল আপনাদের অবশই ভালো লেগেছে। 

আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, নিচে কমেন্ট করে অবশই জানাবেন।

এছাড়া, আর্টিকেলটি যদি সত্যি ভালো লেগে থাকে, তাহলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করতে কিন্তু ভুলবেননা।

 

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top