বর্তমান সময়ে, অনলাইন মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার নানান উপায় গুলি রয়েছে।
ঝটপট ক্যাপচা পুরন করে ইনকাম করার থেকে শুরু করে ব্লগিং বা ইউটিউবের মাধ্যমে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা ইনকাম করা পর্যন্ত, নানান ভাবে নানান পরিমানের টাকা অনলাইন থেকে ইনকাম করা যায়।
এমনকি অনেকেই, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ব্লগিং, অনলাইন কোর্স বিক্রি, ইত্যাদি এই ধরণের নতুন নতুন ইনকামের উপায় গুলিকে কাজে লাগিয়ে প্রতি মাসে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা বা তারও বেশি ইনকাম করছেন।
এখন কথা হচ্ছে, ইন্টারনেট থেকে টাকা আয় করার জন্য কি শুধুমাত্র Facebook, YouTube, বা Instagram-এর মতো social media platform গুলোই ব্যবহার করা যাবে? টেলিগ্রাম এর মতো প্লাটফর্ম থেকেও কি টাকা ইনকাম করা যায়?
অবশই হ্যা, টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করাটাও বর্তমানে সম্ভব। এখন হয়তো আপনি ভাবছেন যে, টেলিগ্রাম থেকে কিভাবে ইনকাম করব বা টেলিগ্রাম থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য আমাকে কি কি করতে হবে।
চিন্তা করতে হবেনা, আমাদের আজকের ব্লগ আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ ভালো ভাবে মন দিয়ে পড়ুন, এতেই অনেক ভালো ভাবে বুঝে নিতে পারবেন যে Telegram থেকে ইনকাম করার জন্য আপনাকে কি কি করতে হবে।
অবশই পড়ুন: মেয়েদের জন্য কি কি অনলাইন জব রয়েছে?
টেলিগ্রাম কি (What Is Telegram in Bengali)?
বর্তমান সময়ে, Telegram হলো এমন একটি online social platform এবং একটি জনপ্রিয় messenger app, যেটি অনেক দ্রুত ভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে চলেছে।
Telegram হলো একটি open-source messenger, যেটা তার প্রতিজন ব্যবহারকারীকেই (users) তাদের ডেটার নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। আর এটাই কারণ যার জন্যে এখানে secret chats এবং encrypted messages-এর মতো ফীচার গুলি যুক্ত রাখা হয়েছে।
Telegram messenger app-টি তার ইউজারদের গোপনীয়তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে এতটাই মন দিয়ে থাকে যে,
যদি দুজন ব্যক্তির মধ্যে হওয়া চ্যাট কনভার্সেশনটি কোনো একজন ব্যক্তি screenshot chrome extension-এর দ্বারা চ্যাট স্ক্রিনটি ক্যাপচার করার চেষ্টা করে থাকে, সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় ব্যক্তিকে সেই বিষয়ে নোটিফিকেশন এর দ্বারা জানিয়ে দেওয়া হয়।
Google Play Store বা অন্যান্য app store-এর মধ্যে উপলব্ধ নানান জনপ্রিয় messenger apps গুলির তুলনায় Telegram app-টি অনেকেই অধিক পছন্দ করেন। এর মূল কারণ হলো, টেলিগ্রাম এর মধ্যে প্রচুর নতুন নতুন ফিচারস (features) গুলি যুক্ত করা হয়েছে।
যেমন, Telegram -এর মধ্যে নিজের একটি channel বা group তৈরি করা যায়, Telegram users দ্বারা free sticker তৈরি করা যায়, বড় বড় সাইজ এর মিডিয়া ফাইল গুলি শেয়ার করতে পারবেন, voice calls করা, video, এবং audio messages পাঠানো ইত্যাদি।
পাভেল ডুরোক (Pavel Duroc ) এবং তার দল মিলে ২০১৩ সালে এই টেলিগ্রাম চালু করেছিলেন। হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক মেসেঞ্জারের বাইরে, টেলিগ্রাম দ্রুত গতিতে ব্যবহূত এবং সেইভাবেই দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করা আরেকটি অ্যাপ।
টেলিগ্রাম কি, এই বিষয়ে আপনারা হয়তো এখন অনেক ভালো করেই বুঝে গিয়েছেন। চলুন, নিচে এখন আমরা টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার সম্পূর্ণ উপায় এবং প্রক্রিয়া গুলির বিষয়ে একে একে জেনেনেই।
রিলেটেড: পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে আয় করার উপায় খুঁজছেন?
অনলাইনে ইনকাম করার জন্য টেলিগ্রাম কি একটি ভালো প্লাটফর্ম?
সোজা এবং সিম্পল ভাবে বললে, অনলাইনে যেকোনো ভাবে যদি প্রচুর followers/subscribers জোগাড় করতে পারেন, তাহলে সেই প্লাটফর্ম থেকে টাকা ইনকাম করার প্রচুর রাস্তা আপনার সামনে নিজে নিজেই চলে আসবে।
যা আমি উপরে আগেই বলেছি, Telegram বর্তমানে প্রচুর জনপ্রিয় messenger apps গুলির মধ্যে আরেকটি।
এখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ নতুন লোকেরা যুক্ত হচ্ছেন, আর তাই এখানেও নিজের একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল তৈরি করে আপনি নিজের একটি অনলাইন ফলোয়ারদের নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারবেন।
আর একবার যদি আপনার টেলিগ্রাম এর মধ্যে আপনার একটি শক্তিশালী অনলাইন নেটওয়ার্ক বেস তৈরি হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে সেখান থেকেও নানান মাধ্যমে ইনকাম করা যাবে।
Telegram থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য কিসের প্রয়োজন?
বর্তমান সময়ে একটি টেলিগ্রাম একাউন্ট থেকে রিয়েল টাকা ইনকাম করার জন্য মূলত ৩-৪টি জিনিসের প্রয়োজনীয়তা অবশই রয়েছে। তবে এই প্রয়োজনীয়তা গুলি সম্পূর্ণ ফ্রীতে এবং সহজ ভাবেই উপলব্ধ রয়েছে।
- আপনাকে একটি Telegram Account তৈরি করতে হবে।
- মোবাইলে ভালো ইন্টারনেট connection থাকা দরকার।
- টাকা ইনকাম করার জন্য, একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল তৈরি করতে হবে।
- আপনাকে সামান্য ক্রিয়েটিভ হতে হবে, এতে নিয়মিত নতুন পোস্ট করতে সমস্যা হবেনা।
শেষে, নিচে বলে দেওয়া নানান ইনকামের উপায় গুলি ব্যবহার করে যখন টাকা আয় করবেন, সেক্ষেত্রে উপায় যেটাই হোক না কেন, পেমেন্ট তুলার জন্য আপনার কাছে একটি bank account অবশই থাকতে হবে।
রিলেটেড: কিভাবে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করব?
টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার সেরা উপায় গুলি কি?
তাহলে চলুন, এখন আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের সব থেকে জরুরি বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করি। এখন আমরা সেই প্রত্যেকটি কৌশল গুলির বিষয়ে জানবো যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে টেলিগ্রাম থেকে টাকা ইনকাম করা যেতে পারে।
তবে তার আগে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, TikTok এবং YouTube-এর মতো Telegram এর মধ্যে কিন্তু views/clicks ইত্যাদির জন্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কোনো ধরণের টাকা দেওয়া হয়না।
সোজা ভাবে বললে, এখন পর্যন্ত Telegram-এর মধ্যে content monetization করার সরাসরি কোনো official option বা উপায় নেই।
তাই, যখনই টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার উপায় গুলি নিয়ে কথা বলা হয়, তখন মূলত paid promotion, direct product selling, নিজের কোর্স বিক্রি, affiliate marketing, ইত্যাদির মতো উপায় গুলিকে কাজে লাগাতে হয়।
নিচে আমরা ৭টি এমন কৌশল গুলি নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলির দ্বারা একটি টেলিগ্রাম একাউন্ট থেকে ইনকামের রাস্তা অবশই তৈরি করা যাবে।
- নিজের পণ্য/পরিষেবা বিক্রি করে ইনকাম,
- এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে টেলিগ্রাম থেকে আয়,
- লিংক ছোট করে ইনকাম করুন,
- টেলিগ্রাম বোট বানিয়ে ইনকাম করুন,
- Ads বিক্রি করে ইনকাম করা যায়,
- অ্যাপ রেফার করে টাকা ইনকাম করুন,
- টাকা নিয়ে কোনো ওয়েবসাইট/ব্লগের প্রচার,
- নিজের ব্লগ/ওয়েবসাইটে ট্রাফিক সেন্ড করে ইনকাম।
চলুন, এখন নিচে আমরা একে একে টেলিগ্রাম থেকে টাকা আয় করার উপায় গুলি বিস্তারিত আলোচনা মাধ্যমে জেনেনেই।
১. নিজের পণ্য/পরিষেবা বিক্রি করে ইনকাম:
যদি আপনার কাছে, অনলাইন মাধ্যমে বিক্রি করা যাবে এমন কোনো product/service আছে, তাহলে সেটিকে আপনি আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল মেম্বারদের সাথে শেয়ার করে বিক্রি করেও প্রচুর লাভবান হতে পারবেন।
শুনতে তেমন সোজা বলে মনে না হলেও, অনেকেই কিন্তু নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলের মধ্যে তাদের নানান অনলাইন কোর্স বা পণ্য গুলি শেয়ার করে প্রচুর গ্রাহক পেয়ে যাচ্ছেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনার Telegram Channel-এর মধ্যে থাকা members-রা কি ধরণের কনটেন্ট পছন্দ করেন। এবার, চ্যানেল মেম্বারদের রুচি বুঝে নিয়ে তাদের ইন্টারেস্টের সাথে জড়িত পণ্য গুলি আপনারা বিক্রি করতে পারেন।
অনলাইন কোর্স, নানান ডিজিটাল প্রোডাক্ট, কাপড়-জামা, ইত্যাদি সব ধরণেরই পণ্য আপনারা নিজের চ্যানেল দ্বারা প্রচার ও বিক্রি করতে পারবেন।
২. এফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে টেলিগ্রামে ইনকাম:
টেলিগ্রাম একাউন্ট থেকে টাকা আয় করার সব থেকে ভালো উপায় হলো, এফিলিয়েট মার্কেটিং।
এক্ষেত্রে আপনাকে একটি ভালো এবং বিশস্ত কোম্পানির এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর সাথে যুক্ত হয়ে, তাদের পণ্য/পরিষেবা গুলিকে নিজের চ্যানেলে প্রচার করতে হবে। পণ্য প্রচারের জন্য আপনাকে একটি বিশেষ লিংক দিয়ে দেওয়া হয় যেটিকে এফিলিয়েট লিংক বলা হয়।
এবার, আপনার প্রচার করা পণ্যটি যদি দিয়ে দেওয়া আপনার এফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করে কেও কিনে থাকে, সেক্ষেত্রে কোম্পানির তরফ থেকে আপনাকে কিছু টাকা কমিশন দিয়ে দেওয়া হয়।
প্রতিটি বিক্রির জন্য কত টাকা কমিশন পাবেন, কমিশনের পরিমান আগের থেকেই নির্ধারিত করা থাকবে। এক্ষেত্রে, আলাদা আলাদা পণ্য, পরিষেবা এবং কোম্পানি গুলির উপর নির্ভর করে সাধারণত ১% থেকে ৫০% পর্যন্ত কমিশন দেওয়া যেতে পারে।
আপনি যদি Telegram ব্যবহার করেছেন, এবং নানান টেলিগ্রাম চ্যানেল গুলির সাথে পরিচিত, তাহলে চ্যানেল গুলিতে নানান loot/deals/discount/offer সহ নানান পোস্ট গুলি অবশই হয়তো দেখেছেন।
এক্ষেত্রেও কিন্তু টেলিগ্রাম চ্যানেলের মালিক, কোনো না কোনো কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং এই করছেন।
টেলিগ্রাম এর জন্য আপনারা এই এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম গুলির সাথে যুক্ত হতে পারেন,
- CPALead Affiliate Program,
- Amazon affiliate program,
- Flipkart affiliate program,
- vCommission,
- Web Hosting Company Affiliate Programs, ইত্যাদি।
৩. লিংক ছোট করে ইনকাম করুন:
Link Shortening করেও কিন্তু Telegram থেকে ইনকাম করা সম্ভব।
ইন্টারনেটে এমন নানান Link Shortening Website গুলি উপলব্ধ রয়েছে যেগুলিতে গিয়ে যেকোনো অনলাইন কনটেন্ট বা ওয়েবসাইট এর URL link পেস্ট করে সেই লিংক গুলিকে দেখতে অনেক ছোট করা সম্ভব।
এবার, লিংক গুলি ছোট হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে money earning links-এর মধ্যেও পরিণত হয়ে যায়।
মানে, লিংক গুলি শর্ট করার পর, সেই লিংক গুলিকে click করে ভিসিট করার সময়, অরিজিনাল ওয়েবসাইটে পৌঁছনোর আগে ইউজারদের একটি প্রোমোটেড পেজ বা বিজ্ঞাপন পেজ দেখিয়ে দেওয়া হয়।
এতে, লিংক শর্ট করা ওয়েবসাইট কিন্তু টাকা তাদের ক্লায়েন্ট থেকে ইনকাম করেন এবং ওয়েবসাইট গুলি তাদের ইনকাম করা টাকার থেকে কিছু টাকা, লিংক শেয়ার করা ব্যক্তিদেরও দিয়ে দেয়।
বেশিরভাগ Link Shortening Website গুলি, প্রতি ১০০০ শর্ট লিংক ক্লিক/ভিসিট এর জন্য প্রায় $২ থেকে $১০ পর্যন্ত দিয়ে দেয়।
এবার, আপনি যত অধিক লোকেদের কাছে লিংক শেয়ার করবেন, এবং যত অধিক লোকেরা আপনার শর্ট লিংক ক্লিক করে ভিসিট করবেন, ততটাই অধিক টাকা ইনকামের সুযোগ আপনি পাবেন।
এবার আপনার কাছে যদি এমন একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল আছে যেখানে প্রায় ২০ হাজার ফলোয়ার্স/মেম্বার্স যুক্ত রয়েছে, তাহলে ভেবে দেখুন তো আপনার শেয়ার করা শর্ট লিংক গুলিতে কি পরিমানে ক্লিক/ভিউ হতে পারে।
২০ হাজার লোকেদের মধ্যে যদি ৫ হাজার লোকেরাও আপনার শর্ট করা লিংক এর মধ্যে ক্লিক করে, তাহলে, ১০০০ ভিউ = $২, ৫০০০ X $২ = $১০ (৮৩০) টাকা।
লিংক শর্ট করে টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করার সেরা কয়েকটি ওয়েবসাইট,
- Shorte.ST,
- ShrinkMe.io,
- Linkvertise.com,
- Shrinkearn.com,
- Smoner.com.
যদি আপনারা মোবাইল দিয়ে ইনকাম করার সেরা উপায় গুলি খুঁজছেন, সেক্ষেত্রে মোবাইলে গেম খেলে টাকা ইনকাম করার অ্যাপস গুলি নিয়ে লিখা আমাদের এই আর্টিকেল একবার অবশই পড়ুন।
৪. টেলিগ্রাম বোট বানিয়ে ইনকাম করুন:
আসলে টেলিগ্রাম বোট গুলির কাজ হলো, নানান ম্যানুয়াল কাজ গুলিকে অটোমেটিক ভাবে প্রসেস করা। মানে, অটোম্যাটিক ভাবে পোস্ট করা, রিপ্লাই করা, চ্যানেলে মেম্বার যুক্ত ও রিমুভ করা, অপ্রয়োজনীয় কনটেন্ট রিমুভ করা ইত্যাদি।
সোজা ভাবে বললে, টেলিগ্রাম বোটস (Telegram Bots) গুলি আপনার চ্যানেল টিকে অনেক সুবিধাজনক ভাবে ম্যানেজ করতে আপনার সাহায্য করে থাকে। এক্ষেত্রে, আপনাকে বার বার চ্যানেল খুলে দেখতে বা চ্যানেল পরিচালনা করার দরকার হয়না।
চিন্তা করতে হবেনা, একবার কিছু সাধারণ কমান্ড লাইন (কোড) সেট করে আপনি নিজের টেলিগ্রাম বোট তৈরি করে নিতে পারবেন। এবার, তৈরি করা চ্যানেল বোট গুলিকে অন্যান্য টেলিগ্রাম চ্যানেল মালিকদের কাছে বিক্রি করেও ইনকাম করা যাবে।
টেলিগ্রাম বোট বানিয়ে ইনকাম করার সুবিধা:
- Telegram Bot বানানো তেমন কঠিন কাজ না,
- অল্প চেষ্টা করলেই আপনি নিজেই টেলিগ্রাম বোট বানাতে পারবেন,
- বোট বানানোর নানান টিউটোরিয়াল গুলি আপনি ইউটিউবে পেয়ে যাবেন।
- তৈরি করা বোট গুলিকে সহজে বিক্রি করে ইনকাম করা যায়।
৫. Ads বিক্রি করে ইনকাম করা যায়:
যখন আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে হাজার হাজার ফলোয়ার্স/মেম্বার থাকবে, তখন নিজের চ্যানেলে নানান ছোট-বড় কোম্পানির বিজ্ঞাপন গুলি দেখিয়েও কিন্তু অনেকেই ইনকাম করছেন।
এমন অনেক ওয়েবসাইট, ব্লগ, ব্যবসা, ব্র্যান্ড বা কোম্পানি গুলি আছে, যারা ছোট-বড় নানান টেলিগ্রাম চ্যানেলের মালিকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের পণ্য বা পরিষেবা গুলির বিষয়ে নানান কনটেন্ট গুলি চ্যানেলে পাবলিশ করতে বলেন।
এতে, চ্যানেল মালিকেরা কোম্পানি গুলির থেকে মোটা অংকের টাকা চার্জ হিসেবে আদায় করতে পারবেন।
মনে রাখবেন, এক্ষেত্রে আপনার চ্যানেলের মূল বিষয়ের সাথে রিলেটেড বিজ্ঞাপন বা পণ্যের প্রচার আপনাকে করতে হবে। আপনার চ্যানেলের মেম্বাররা যেই ধরণের কনটেন্ট বা বিষয় পছন্দ করেন, সেই বিষয়ে পোস্ট করা বিজ্ঞাপন গুলিতেও তাদের রুচি থাকবে।
উদাহরণ স্বরূপ, আমি নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলের মধ্যে ওয়েব হোস্টিং এবং ডমেইন রিলেটেড পোস্ট গুলি করে থাকি। আমার চ্যানেলের মেম্বাররা ওয়েবসাইট, ডোমেইন-হোস্টিং রিলেটেড কনটেন্ট গুলি পছন্দ করেন।
এক্ষেত্রে আমি, domain এবং web-hosting রিলেটেড কোম্পানি গুলির সাথে যুক্ত হয়ে শুধুমাত্র সেই ধরণের পণ্যের বিজ্ঞাপন নিজের চ্যানেলে চালাই। এতে, চ্যানেলের মেম্বাররা আমার দিয়ে দেওয়া বিজ্ঞাপন গুলি দেখেন এবং সেগুলিতে অবশই রুচি রাখেন।
৬. অ্যাপ রেফার করে টাকা ইনকাম করুন:
টেলিগ্রাম থেকে টাকা আয় করার আরেকটি দারুন উপায় হলো, নানান অ্যাপ গুলি রেফার করে ইনকাম করা। ইন্টানেটে এমন অনেক অ্যাপস রয়েছে যাদের একটি অফিসিয়াল refer and earn program থাকে।
এই Refer and earn program গুলি খানিকটা এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মতো হলেও এক্ষেত্রে আপনারা নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলের মেম্বারদের নানান অ্যাপ গুলি রেফার করতে হয়।
এবার, যখনই আপনার চ্যানেলের মেম্বাররা আপনার রেফার করা অ্যাপটি বিশেষ রেফারাল লিংক বা কোড ব্যবহার করে তাদের মোবাইলে ডাউনলোড এবং ইনস্টল করবেন, আপনি আপনার রেফারাল কমিশন ইনকাম পেয়ে যাবেন।
বেশিরভাগ অ্যাপ থেকে রেফারাল ইনকাম হিসেবে প্রায় ১০ থেকে ১০০ টাকা প্রতি রেফারে পাওয়া যেতে পারে। তাই, যদি আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেলে হাজার হাজার মেম্বার রয়েছে, সেক্ষেত্রে নানান মজার মজার অ্যাপস গুলি রেফার করেও ভালো মানের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে অ্যাপ রেফার করে ইনকাম করার ক্ষেত্রে এই অ্যাপস গুলি ব্যবহার করতে পারেন:
- Google Pay,
- EarnEasy : Earn Cash,
- ySense,
- Upstox,
- Swagbucks,
- PhonePe,
- Amazon Pay,
- Groww, ইত্যাদি।
৭. টাকা নিয়ে কোনো ওয়েবসাইট/ব্লগের প্রচার:
বর্তমান সময়ে হাজার হাজার ব্লগাররা রয়েছেন, যারা নিজের ব্লগে Google AdSense-এর মতো প্লাটফর্ম গুলির সাহায্যে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা ইনকাম করছেন।
এবার, নিজের ব্লগে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে অধিক টাকা ইনকাম করার জন্য একটি ব্লগে প্রচুর ট্রাফিক/ভিসিটর আসতে হবে। আর এখানেই আপনি নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে টাকা আয় করার নতুন একটি রাস্তা তৈরি করে নিতে পারবেন।
আপনি নানান blogger/website মালিকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের থেকে সামান্য কিছু টাকা নিয়ে তাদের ওয়েবসাইটের কনটেন্ট গুলির নিজের চ্যানেলে প্রচার করতে পারবেন।
এভাবে, ব্লগ/ওয়েবসাইট মালিকেরা নিয়মিত আপনার টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে তাদের ওয়েবসাইটে ট্রাফিক পাবেন এবং তাদের ইনকামও বাড়বে। এই পরিষেবার জন্য আপনিও ব্লগ/ওয়েবসাইট মালিকদের থেকে উপযুক্ত পরিমানে অর্থ চার্জ করে নিতে পারবেন।
Facebook Page, LinkedIn, Social Media Group, ইত্যাদি নানান মাধ্যমে আপনি নানান bloggers-দের সাথে যুক্ত হয়ে তাদেরকে এই পরিষেবা অফার করার কথা বলতে পারেন।
৮. নিজের ব্লগ/ওয়েবসাইটে ট্রাফিক সেন্ড করে ইনকাম:
উপরে বলে দেওয়া নানান উপায় গুলি কাজে লাগিয়েও যদি নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে ইনকাম করতে পারছেননা, সেক্ষেত্রে এই উপায়টি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
যদি আপনার সামান্য লেখালেখির অভিজ্ঞতা আছে, সেক্ষেত্রে আপনি একটি এফিলিয়েট ব্লগ সাইট তৈরি করতে পারেন। নানান এফিলিয়েট প্রোডাক্ট গুলি টার্গেট করে নিজের ব্লগে নিজের পছন্দমতো আর্টিকেল লিখতে পারেন।
যদি আপনার ব্লগ সাইট থেকে ইনকাম করতে হয়, তাহলে আপনার ব্লগে ট্রাফিক/ভিসিটর্স আসতে হবে।
ব্লগ সাইটে যত অধিক ট্রাফিক আসবে, আপনি আপনার ব্লগে দেখানো বিজ্ঞাপন এবং এফিলিয়েট লিংক থেকে ততটাই অধিক টাকা ইনকাম করার সুযোগ পাবেন।
এবার, যদি আপনার Telegram channel-এর মধ্যে কয়েক হাজার মেম্বার রয়েছে, সেক্ষেত্রে আপনি নিজের ব্লগের কনটেন্ট এবং লিংক গুলি চ্যানেলের মেম্বার দের সাথে শেয়ার করে টেলিগ্রাম থেকে নিজের ব্লগে ট্রাফিক পাঠাতে পারবেন।
আর এভাবেই, গুগল সার্চ ট্রাফিক নিয়ে মাথা বেথা না রেখেই অনেক সোজা ভাবে নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে নিজের ব্লগে ট্রাফিক/ভিসিটর পাঠিয়ে করতে পারবেন ব্লগ থেকে নিয়মিত ইনকাম।
অবশই পড়ুন: অনলাইনে প্রতিদিন 200 টাকা ইনকাম করা উপায়?
FAQ:
টেলিগ্রাম চ্যানেলে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার হলে আপনাকে ১ টাকাও দেওয়া হবেনা। কারণ, শুধুমাত্র ১ হাজার subscriber/members থাকা একটি telegram channel-এর মধ্যে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য কোনো কোম্পানি বা ওয়েবসাইট আপনাকে কোনো টাকাই দিবেনা। তাই, নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে মোটামোটি ভালো অংকের টাকা ইনকাম শুরু করার জন্য, আপনার কাছে কমেও ১ লক্ষ subscribers থাকা দরকার।
একজন ছাত্র, মহিলা বা এমন জেকেও যে ইন্টারনেট থেকে পার্ট-টাইম ইনকাম করতে চাইছেন, টেলিগ্রাম থেকে আয় করার কথা অবশই ভাবতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার কাছে শুধুমাত্র একটি স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই কাজ হয়ে যাবে। অনেকেই কিন্তু নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন। তবে এক্ষেত্রে ইনকামের সঠিক উপায় এবং জ্ঞান আপনার থাকতে হবে। এছাড়া, হার্ড ওয়ার্ক এর পাশাপাশি স্মার্ট ওয়ার্ক ও করতে হয়।
অবশই যাবে, আমি উপরে এমন অনেক উপায় গুলির বিষয়ে বলে দিয়েছি যেগুলিকে কাজে লাগিয়ে টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে আয় করা যেতে পারে। তবে, যদি দিনে ১০০০ টাকা ইনকাম করতে চাইছেন, সেক্ষেত্রে আপনার চ্যানেলে প্রায় ১ থেকে ২ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে। এবার, কোনো কোম্পানি বা ব্যান্ড এর জন্য ১-২ টি পেইড পোস্ট করলেই আরামে ১০০০ টাকা ইনকাম হয়ে যাবে।
উপসংহার:
তাহলে বন্ধুরা, উপরে বলে দেওয়া এই প্রত্যেকটি উপায় ব্যবহার করে আপনারা নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে টাকা আয় করে নিতে পারবেন। এগুলি ছাড়াও, অন্যান্য নানান উপায় গুলি আছে যেগুলিকে কাজে লাগিয়েও অনেকেই ইনকাম করছেন।
যেমন ধরুন, ইউটিউব চ্যানেলে ট্রাফিক পাঠিয়ে, টেলিগ্রাম একাউন্ট বিক্রি করে, ডোনেশন নিয়ে, টেলিগ্রাম চ্যানেলে ই-বুক বা অন্যান্য ডিজিটাল কনটেন্ট বিক্রি করে, ইত্যাদি।
শেষে, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি কেমন লাগলো, নিচে কমেন্ট করে কিন্তু অবশই জানিয়ে দিবেন।